অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা পদ্ধতি বাতিল ঘোষণা করলেও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক আজ এক বক্তব্যে বলেছেন, কোটা ব্যবস্থা থাকবে তবে মেধাবিরা যাতে বেশি সুযোগ পায় তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
শনিবার দুপুর ১২টায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা-প্রাগপুর পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গনের অন্যতম সংগঠক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা রশিদুল আলমের (আনিস) নামে জেলা পরিষদে বাস্তবায়নাধীন সড়কের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। খবর যুগান্তরের।
মন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে যে তথ্য প্রকাশ পেয়েছে, তাতে অন্যদের মদদ থাকার সুস্পষ্ট প্রমাণ আছে। দেশ থেকে বিতাড়িত তারেক জিয়া তাদেরকে উৎসাহিত করেছে। এই আন্দেলনকে কীভাবে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে পরিণত করা যায়, সেই চেষ্টাও করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, হতে পরে প্রথম দিকে এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য সৎ ছিলো, কিন্তু পরবর্তীতে এটা উদ্দেশ্যমূলক ছিলো এবং এই আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি রাজপথে আসার একটা হীন প্রচেষ্টা চালিয়েছিল।
এসময় মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের আশ্বস্ত করে মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মকে কীভাবে সম্মানিত করতে হবে এবং কীভাবে রাষ্ট্রীয় এবং প্রশাসনিকভাবে কাজে লাগানো যাবে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিন্তা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা রশিদুল আলম, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল মারুফ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান ৫৬ শতাংশ কোটা সংস্কার করে একটি যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছিলো শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি ছিলো কোটা কমিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে। আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে এক বক্তব্যে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের তীব্র সমালোচনা করেন এবং তাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে পুরো কোটা পদ্ধতিকেই বাতিলের ঘোষণা দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা বাতিলের ঘোষণা দেয়ার পরই অ্যানালাইসিস বিডি’র একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, প্রধানমন্ত্রীর আসল উদ্দেশ্য কোটা বাতিল নয়। সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া আন্দোলন দমানোর জন্য রাগের মাথায় কোটা বাতিলের ঘোষণা ছিল সরকারের একটি কৌশল। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারি না করা এবং কোটা আন্দোলনকারী ৩ নেতাকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে যাওয়া তারই প্রমাণ বহন করে। এখন মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রীর কোটা থাকবে প্রসঙ্গে বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে আন্দোলনকারীদের সাথে একপ্রকার ধোঁকাবাজি বলেই প্রমাণ করলো।