‘গতকাল রাতে ছাত্রীদের সাইবার আইনে মামলা করার হুমকি দেওয়া হয়নি। আমার কাছে ইন্টেলিজেন্স সেলের লোক এসেছিল, এ জন্য ছাত্রীদের সচেতন করেছিলাম’ বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ সাবিতা রেজওয়ান রহমান।
২০ এপ্রিল, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রিয়.কমকে এসব কথা বলেন প্রাধ্যক্ষ সাবিতা রেজওয়ান রহমান।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যাওয়া মেয়েদের হল মাঠে ডেকে এনে বিভিন্ন হুমকি দিতে থাকেন প্রাধাক্ষ্য সাবিতা রেজওয়ান রহমান। ওই সময় তিনি ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘কেউ বিভ্রান্তিকর পোস্ট দিলে তাদের গভমেন্ট থেকে দেখা হচ্ছে, ইন্টেলিজেন্স দেখবে কারা কারা পোস্ট দিচ্ছে।’
এই বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক সাবিতা রেজওয়ান চৌধুরী বলেন, ‘কিছু মেয়ে গুজব ছড়াচ্ছে, কে বা কারা। আমাদের শিক্ষকদের তো এটা বের করার কথা না। আমাদের এখানে ইন্টেলিজেন্স সেলের লোক এসেছিল, তারা নাকি সুফিয়া কামাল হলের কয়েকজনকে শনাক্ত করেছে। এই জন্য আমি মেয়েদের সচেতন করছিলাম, তোমরা কেউ কিন্তু কোনো পোস্ট দিও না। তোমাদের মনিটর করা হচ্ছে। কেউ ফেক পোস্ট দিও না।’
সুফিয়া কামাল হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রিয়.কমকে বলেন, ‘আমরা গত রাতে হল মাঠে জটলা দেখে সেখানে যাই। গিয়ে দেখি প্রাধ্যক্ষ ম্যাম ১০ তারিখের আন্দোলনে থাকা মেয়েদের সাথে কথা বলছেন। সেখানে আমাদের মতো অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীও ছিল। হাউজ টিউটর ম্যামরা আমাদের ওখান থেকে চলে যেতে বলেন। আমরা ওখান থেকে সরতে না চাইলে হলে সিট বাতিলের হুমকি দিতে থাকেন। পরে আমরা সেখান থেকে চলে গিয়ে, বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে নিচের ঘটনা দেখতে থাকি। পরে আমাদের সেখান থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।’
জানা গেছে, গতকাল রাতে ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত চারজন আবাসিক ছাত্রীর অভিভাবককে হলে ডাকা হয়। তাদের মধ্যে তিনজনকে অভিভাবকদের মাধ্যমে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। ওই চার শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন প্রশাসন কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এই বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘ওদের মোবাইলে কিছু কিছু ইনফরমেশন আছে, এই ইনফরমেশনগুলো দেখবার বিষয় আছে। আমি চারজন মেয়ের অভিভাবককে ডেকেছিলাম, তাদেরকে এই বিষয়গুলো দেখানোর জন্য। আমরা হল থেকে তাদের চলে যেতেও বলি নাই, নিয়ে যেতেও বলি নাই। ওনারা নিজেরাই মুচলেকা দিল ওরা আর এ রকম করবে না। আমি চাই না আমার মেয়েরা সাইবার ক্রাইমে পড়ুক। আমি মেয়েদের আগে কাউন্সিলিং করব।’
মেয়েদের কেন মধ্যরাতে হল থেকে বের করে দেওয়া হলো—এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক সাবিতা বলেন, ‘আমরা কোনো মেয়েকে বহিষ্কার বা সিট বাতিল করি নাই। তাদের অভিভাবক তাদেরকে হল থেকে নিয়ে গেছেন। তারা আজকে আবার হলে ফিরে এসেছে। আজকে আমাদের হলের সাথে বঙ্গমাতা হলের ফুটবল খেলা ছিল। ওই মেয়েগুলার দুইজন আবার আমার হলের খেলোয়াড়। তারা আজকে খেলেছে।’
সার্বিক বিষয়ে প্রক্টর গোলাম রব্বানী প্রিয়.কমকে বলেন, ‘মাননীয় উপাচার্য মহোদয় সকালে এইসব বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছেন। এখানে আমার আর বলার কিছু নেই।’
সূত্র: প্রিয় ডটকম