শুক্রবার, অক্টোবর ৩১, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home slide

মজলুমের হাহাকারে মলিন চারিপাশ

মার্চ ১২, ২০১৮
in slide, Top Post, কলাম, মতামত
Share on FacebookShare on Twitter

মুসাফির রাফি

বাংলাদেশ, আমাদের প্রানের স্পন্দন, আজ মজলুম মানবতার হাহাকারে ক্রমশ যেন ভারী হয়ে উঠছে। প্রকৃতিও যেন এই ভার নিতে নিতে ক্লান্ত, বড্ড বিষন্ন। রাজনীতি থাকলে সেখানে পক্ষ-প্রতিপক্ষও থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই প্রতিপক্ষকে দমন করার নামে বাংলাদেশে আজ যা চলছে, যা ঘটছে তা কোন বিবেকসম্পন্ন মানুষ সহ্য করতে পারেনা। কোন সভ্য দেশে সাধারন নিরীহ নাগরিকেরা এভাবে নিপীড়িত হতে পারেনা। ভাবতে লজ্জ্বা হয়, কষ্টে মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করে যখন ভাবি কিভাবে আমাদের চারিপাশ কুৎসিতভাবে পাল্টে যাচ্ছে। মাত্র ১০ বছরে পাশবিকতা আর বর্বরতার ছোবলে পড়ে একটি জনপদ কিভাবে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে তার জ্বলন্ত উদাহরন আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ।

মাত্র ৩ দিন আগে ছাত্রদলের ঢাকা মহানগরী উত্তরের নেতা জাকির হোসেন মিলনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে নেয়া হয় রিমান্ডে। আজ রিমান্ড শেষে কোর্টে হাজির করার সময় জানা যায়, মিলন মারা গেছে। কি হয়েছিল রিমান্ডে, কতটা নির্যাতন চালানো হয়েছিল এই মানুষটার উপর যার কারনে সে পৃথিবী ছেড়ে ভয়ে পালিয়ে গেল। সরকার প্রধান, রাষ্ট্রপ্রধান কিংবা মানবাধিকার কমিশন- কে দেবে এই প্রশ্নের উত্তর। ফ্যাসিজম আর দালালির এমন এক অধ্যায়ে আমরা অবস্থান করছি যেখানে মিলনকে হত্যা করার জন্য দায়ী পুলিশ অফিসারকে হয়তো তিরস্কার নয়, বরং অনেক বড় প্রমোশন দেয়া হবে।

কিন্তু যেই মানুষটি হারিয়ে গেলো চিরতরে, যেই পরিবারটি নিছক রাজনীতির প্রতিহিংসার আঁচড়ে চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেললো তার প্রিয়জনকে, তারা আসলে কি নিয়ে বাঁচবে? মানবতাকে যেভাবে পায়ের নিচে ফেলে পিষ্ট করে এই ভুখন্ডে হত্যা করা হচ্ছে, তার নজির বিশ্বের আর কোথাও কি আছে?

আজকের দিনের শুরুতেই খবর আসে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আরো ১১ জন নেতাকর্মীসহ রাজশাহী থেকে গ্রেফতার হয়েছেন। মনে প্রশ্ন জাগে, জামায়াত কি কোন নিষিদ্ধ দল? সভা-সমাবেশ থেকে আটক হলে না হয় পুলিশের অনুমতির প্রশ্ন আসতো, কিন্তু তারা গ্রেফতার হয়েছেন একটি বাসা থেকে, ঘরোয়া বৈঠক করার সময়। গনতান্ত্রিক মুল্যবোধে বিশ্বাসী কোন মানুষ কি পুলিশের এহেন বর্বরতা এবং অগনতান্ত্রিক আচরনকে মেনে নিতে পারে?

কিছুটা সময় পরে জানতে পারলাম, অধ্যাপক মুজিব সাহেব দীর্ঘদিন তার বৃদ্ধা মাকে দেখতে পারেননি। সবাই জানে দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর ধরে অফিসিয়ালী নিষিদ্ধ না হলেও জামায়াতে ইসলামী কার্যত অনেকটা নিষিদ্ধ হয়েই আছে। এই দলের নেতাদের কেউই এখন অসংখ্য মামলার ভয়ে প্রকাশ্যে আসতে পারেননা। প্রকাশ্যে তেমন কোন দলীয় কাজও নেই। কিন্তু এই মানুষগুলোরও তো পরিবার আছে, বাবা-মা আছে, সন্তানাদি আছে। তারা কতদিন, কত বছর এভাবে বিচ্ছিন্ন থাকবেন?

একজন বৃদ্ধা ও অসুস্থ মা-কে দেখতে গিয়ে সন্তান গ্রেফতার হচ্ছে এই ঘটনাও ঘটছে আজ আমাদের বাংলাদেশে। এতটা পৈশাচিক কবে আর কিভাবে হলো আমাদের প্রশাসন?

যে ১১ জন ব্যক্তি অধ্যাপক মুজিবের সাথে গ্রেফতার হলেন তার মধ্যে অন্যতম একজন ব্যক্তি হলেন অধ্যাপক আবুল হাশেম। তিনি জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর আমীর। এটা তার দলীয় পরিচয়। কিন্তু পেশাগতভাবে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক। খুবই যোগ্যতাসম্পন্ন এবং সর্বজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক। এই মানুষটি জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত না হলে এতদিনে হয়তো ভিসিও হয়ে যেতেন বিশ্ববিদ্যালয়টির।

সকলেই আবুল হাশেমকে স্যার বলেই অভিহিত করে। এই আবুল হাশেম স্যার ভীষনরকম অসুস্থ বেশ অনেকদিন ধরেই। একটি ম্যাসিভ হার্ট এট্যাক হয়েছে তার খুব সম্প্রতি। চলাচল করতে পারেননা একা একা। জামায়াতের মহানগরী আমীরের দায়িত্ব থেকেও ছুটি নিয়েছিলেন অসুস্থতার কারনেই। এই প্রচন্ড অসুস্থ মানুষটি হয়তো ভারপ্রাপ্ত আমীর আসার কথা শুনে কষ্ট করে দেখা করতে এসেছিলেন, কিন্তু তাকেও ছেড়ে কথা বলেনি নির্মম পুলিশ সদস্যরা।

হৃদরোগে আক্রান্ত মানুষ কিংবা মায়ের সাথে দেখা করতে যাওয়া সন্তানদেরকে যেই আইন শৃংখলা বাহিনী আটক করে, তাদের কাছে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে এই আটককৃত মানুষগুলো কি আদৌ দেশের আইন শৃংখলা পরিস্থিতির জন্য হুমকি? কেন এই মানুষগুলোর প্রতি বার বার অবিচার করা হয়? তারা বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী বলেই নাকি দেশের বৃহত্তম ইসলামী দলের নেতা হওয়াই তাদের অপরাধ?

ছাত্রদলের মিলন কি দাগী আসামী? কেন তাকে পুলিশি কাস্টডিতে নিয়ে অত্যাচার করে হত্যা করা হলো? বিএনপি এবার কোন সহিংস আন্দোলন করেনি। বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষ তার স্বাক্ষী। তাহলে এই দলের নেতাদেরকে বিনা অপরাধে আটক করে কেন নির্যাতন চালানো হবে?

এই সরকারের আমলে বিগত ১০ বছরে বহু নিরীহ মানুষকে হত্যা ও গুম করে ফেলা হয়েছে। অসংখ্য মায়ের বুক খালি করা হয়েছে। অসংখ্য শিশুকে এতিম করা হয়েছে। বিয়ের মেহেদীর রং শুকানোর আগেই অনেক স্ত্রীকে বিধবা হতে হয়েছে। পৃথিবীতে আসার আগেই মায়ের পেটে থাকা অবস্থাতেই অসংখ্য শিশু এতিম হয়ে গেছে।

জানিনা, এত সব মজলুমের কান্না আর হাহাকার জালিমের কানে পৌছায় কিনা। তবে আল্লাহর আরশে ঠিকই পৌছায়। জালিমের চোখের পানি আর আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের মাঝে কোন দেয়াল থাকেনা। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব দেখছেন, সময় দিচ্ছেন, তার হিসেব ও ফায়সালা অনুযায়ী তিনি এর প্রতিদান দেবেন। নিশ্চয়ই দেবেন।

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

জনপ্রিয় সংবাদ

  • রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর: ১৫ বছর পরেও বেপরওয়া খুনিরা, সুবিচার পায়নি শহীদ পরিবার

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • পাহাড়ে পরিকল্পিতভাবে বাঙালি উচ্ছেদ ও ডি ইসলামাইজেশন করা হচ্ছে

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ইসলামী সংস্কৃতি ও আধুনিক সংস্কৃতি

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD