রবিবার, নভেম্বর ২, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home Home Post

পুলিশ সুপার হারুনের যত অপকর্ম

ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৮
in Home Post, slide, বিশেষ অ্যানালাইসিস
Share on FacebookShare on Twitter

অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক

দিনটি ছিলো ২০১১ সালের ৬ জুলাই। বিএনপির সকাল সন্ধ্যা হরতাল চলছিলো। ভোর ছয়টার দিকে হরতালের সমর্থনে মিছিল করার উদ্দেশ্যে বিরোধী দলীয় চীপ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের নেতৃত্বে দলের ২০-২৫ জন সাংসদ মানিক মিয়া এভিনিউয়ের সামনে জড়ো হন। এক পর্যায়ে তাদের মিছিলে পুলিশ বাধা দেয়। হঠাৎ করেই পুলিশ জয়নাল আবেদিন ফারুকের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, পুলিশের তৎকালিন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী উপকমিশনার হারুনুর রশিদ আক্রমণাত্মকভাবে জয়নুল আবেদিন ফারুকের উপর হামলা চালান। তার গেঞ্জি ছিঁড়ে ফেলেন এবং মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত করেন। বিরোধী দলের একজন চীপ হুইপের উপর এমন ন্যাক্কারজনক হামলা নিয়ে তখন সমালোচনার ঝড় উঠেছিল।

কিন্তু যতই সমালোচনা হোক না কেনো, তাতে সরকার কিংবা পুলিশ বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেনি। বরং হারুনুর রশিদের উপর সরকার ব্যাপক খুশি হয়েছে বলেই পরবর্তীতে প্রমান হয়েছেন। কেননা, ওই ন্যাক্কারজনক হামলার পর হারুনুর রশিদকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একে একে তার পদোন্নতি হয়েছে। পাশাপাশি ভূষিত হয়েছেন নানা সরকারি পুরস্কারে।

বর্তমানে পুলিশের এই কর্মকর্তা গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে কর্মরত আছেন। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে পুলিশ সদর দফতরে আইজিপি এ কে এম শহীদুল হকের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যে সমালোচনার তৈরি করেছে। গাজীপুরের পুলিশ সুপার হলেও তিনি ডিএমপির বিষয়েও খবরদারি করতে ছাড়েন না। সম্প্রতি পুলিশের প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে বিএনপি কর্মীদের উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপির মিছিল থেকেই পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির চক্র আবারও নতুন কায়দায় জেগে উঠেছে। তাদের রুখে দিতে হবে। তারা পুলিশের অস্ত্র ভেঙেছে, গাড়ি ভেঙেছে। তারা কিন্তু চলে যায়নি।’

অর্থাৎ প্রিজন ভ্যানে হামলার ঘটনায়ও এসপি হারুন জামায়াত শিবিরের সংশ্লিষ্ট দেখতে পেয়েছে। পুরো বক্তব্যটি তিনি জামায়াত শিবিরকে নিয়েই দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘জামায়াত-শিবির চক্রের দুর্বৃত্তরা এখনও ঢাকাসহ পুরো দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমি মনে করি, নতুন আইজিপির নেতৃত্বে নতুন উদ্যোমে আবারও সারাদেশে এসব চক্রান্তকারীর বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম হবে। তিনি হলি আর্টিজান, শোলাকিয়া ও গাজীপুরে জঙ্গি হামলাকেও জামায়াত শিবিরের কাজ বলে উল্লেখ করেছেন।

অ্যানালাইসিস বিডির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিরোধী দলীয় চীপ হুইপকে পিটিয়ে পুরস্কৃত ও পদোন্নতি হওয়ার পর তার ঐদ্ধত্য আরো কয়েকগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। অপকর্মে সীমা অতিক্রম করেছেন তিনি। বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও হয়রানি করতে তার জুড়ি নেই।

জানা যায়, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা বাবুনগরীকে কোনো প্রকারের নির্দেশ বা ওয়ারেন্ট ছাড়াই নিজ উদ্যোগে গ্রেফতার করেছিলো হারুনুর রশিদ। এরজন্য তাকে কোনো জবাবদিহি করতে হয়নি। পদোন্নতি পেয়ে গাজীপুর যাওয়ার পর ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ মাঠে খালেদা জিয়াকে সমাবেশ করতে দেননি এই কুখ্যাত এসপি।

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় গাজীপুরের শ্রীপুরে এক ইউপি সদস্য প্রার্থীকে কুপিয়ে হত্যা এবং নির্বাচন সংক্রান্ত নানা অভিযোগের পর পুলিশ সুপার হারুনসহ সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে নির্বাচন কমিশন ২০১৬ সালের ২২ এপ্রিল প্রত্যাহার করে।

পুলিশ সুপার হারুনের বিরুদ্ধে গাজীপুরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অর্থের বিনিময়ে ব্যক্তি বিশেষের পক্ষে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ ছিলো। এমনকি ব্যক্তি বিশেষকে বিজয়ী করার পরিকল্পনাও ছিল তার। এ উদ্দেশ্যে হারুন জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের তার অফিসে ডেকে নেন এবং কে কে চেয়ারম্যান হবেন, তা তিনি আগেই ঘোষণা দেন। এনিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে হুঁশিয়ার করে দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

নির্বাচনে এসপি ও তার ঘনিষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট থানার ওসিরা প্রভাব বিস্তার করতে পারে- এমন আশঙ্কার কথা প্রকাশ করে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ইসিতে অভিযোগ করেন। এর পর তাদের প্রত্যাহার করে উপযুক্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন ইসি। সে মোতাবেক তাকে গাজীপুর থেকে প্রত্যাহার করা হলেও মাত্র কয়েকদিনের ব্যাবধানে ইসিকে না জানিয়েই তাকে আবার সেখানেই পদায়ন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যা ছিলো ইউপি নির্বাচন আইনের সরাসরি লঙ্ঘণ। এভাবেই সরকারিভাবে তার অন্যায়ের প্রশ্রয় প্রদান করা হয় অব্যাহতভাবে।

অ্যানালাইসিস বিডির অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, গাজীপুরের মেয়র অধ্যাপক এম.এ. মান্নান ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নেপথ্যেও তার ইন্ধন ছিল। জেলার শীর্ষ থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা করা হয়েছে। মামলা আর হামলার ভয়ে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা ঘরছাড়া হয়েছেন। বিএনপির জেলা থেকে ওয়ার্ড- কোনো কার্যালয়ই খুলতে দেননি এই এসপি। দলীয় কর্মসূচী দূরে থাক মানববন্ধন পর্যন্ত করতে পারেনি বিএনপি। জেলা বারের আইনজীবীও এসপি হারুনের অত্যাচার থেকে রেহাই পায়নি।

জানা যায়, গাজীপুর সিটি মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানকে দুটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের পৃথক অভিযোগে মিথ্যা মামলা দিয়ে বরখাস্ত করার পেছনে তার অবদান রয়েছেন। স্থানীয়দের তথ্যমতে, চান্দনা এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরে যাওয়ার কথা প্রথমে পুলিশ স্বীকার করে। কিন্তু পরে নাশকতামূলক অগ্নিকাণ্ড দেখিয়ে মামলা দেওয়া হয়। অথচ আগুন লাগার অন্তত পাঁচঘণ্টা আগে মান্নানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে পুলিশের লেগুনায় অগ্নিসংযোগ করার ঘটনাও ছিল এসপি হারুনের নির্দেশে পুলিশের একটি ‘নাটক’।

সরকার দলীয়রাও রেহাই পায়নি কুখ্যাত এই এসপির হাত থেকে। সরকার দলীয় কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন মণ্ডল, নূরুল ইসলাম নূরু, মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি মাসুদ রানা এরশাদ ও তার পাঁচ সহোদরসহ অনেক দলীয় নেতাকর্মী এসপি হারুন কর্তৃক নাজেহাল ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। এমনকি গাজীপুর-২ আসনের এমপি জাহিদ আহসান রাসেলের চাচা মতিউর রহমানকেও হয়রানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানান, এসপি হারুন স্থানীয় আওয়ামী লীগকে পাত্তাই দেন না। এমনকি মন্ত্রী-এমপিকেও না। ভদ্র সমাজের কেউ ভয়ে তার কাছে অভিযোগ নিয়ে যেতেন না। এসপি হারুন নিজের স্বার্থে নানা কৌশলে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে রাখেন। দলের ব্যক্তিবিশেষকে সুবিধা দিতেন, দলের অনেকের বিরুদ্ধে মামলাও দিয়েছেন। এ ছাড়া বিরোধপূর্ণ জমি ‘চুক্তিতে’ একপক্ষকে দখল দিয়ে মোটা অঙ্কের বাণিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

উঠতি ব্যবসায়ীদের নানা অজুহাতে গ্রেফতার করে তাদের কাছ থেকে পাঁচ থেকে ২০ লাখ পর্যন্ত টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হতো বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

কালিয়াকৈরের যুবলীগ নেতা রফিক হত্যার পর ডিবির উৎপাতে কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা, পল্লীবিদ্যুৎ, হরিণহাটিসহ আশপাশের এলাকা প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে। তখন ১৫ দিনে প্রায় দেড়শ লোককে ডিবি আটক করে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। এক ব্যক্তিকে দুই থেকে তিনবার আটক করার ঘটনাও ঘটেছে।

মোটকথা গাজীপুরে এক আতঙ্কের নাম হচ্ছে এসপি হারুনুর রশিদ। তিনি গাজীপুরে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন এলাকার মানুষ ডিবির নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আকম মোজাম্মেল হককে মৌখিকভাবে জানিয়েও কোনো ফল পাননি তারা। গাজীপুর থেকে কমপক্ষে পাঁচশ ব্যক্তিকে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগে আটক করে ডিবি। পরে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের উৎকোচ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। যারা টাকা দিতে পারেননি বা দেননি তাদের বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে, আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা জামায়াতকে আলাদাভাবে দেখা হয়নি।

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

জনপ্রিয় সংবাদ

  • রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর: ১৫ বছর পরেও বেপরওয়া খুনিরা, সুবিচার পায়নি শহীদ পরিবার

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • পাহাড়ে পরিকল্পিতভাবে বাঙালি উচ্ছেদ ও ডি ইসলামাইজেশন করা হচ্ছে

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ইসলামী সংস্কৃতি ও আধুনিক সংস্কৃতি

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD