শুক্রবার, অক্টোবর ২৪, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home slide

‘আম্মুর বিশ্বাস ছিল আব্বু ফিরবে কিন্তু এখন আব্বু ফিরলেও আম্মু ফিরবে না’

নভেম্বর ৭, ২০২১
in slide, রাজনীতি
Share on FacebookShare on Twitter

৯ বছর আগের এক রাতে মারুফা ইসলামের ফোনটা বেজে উঠেছিল হঠাৎ। ছোট্ট একটা বার্তা—তাঁর স্বামী মফিজুল ইসলাম (রাশেদ) গ্রেপ্তার। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই স্বামীর খোঁজে পথে নেমেছিলেন মারুফা।

গুম হয়ে থাকা সেই স্বামীর সন্ধান আর পেলেন না মারুফা ইসলাম। গত বুধবার সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা গেছেন। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল লতিফ এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

স্বজনেরা বলেন, বুধবার বেলা ১১টার দিকে সাভারের হেমায়েতপুর থেকে লালমাটিয়ায় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) উদ্দেশে বেরিয়েছিলেন মারুফা। রাস্তা পার হচ্ছিলেন তিনি। মোটরসাইকেলের ধাক্কায় রাস্তায় পড়ে গেলে পেছন থেকে এসে একটা বাস চাপা দেয়। একজন সাংবাদিক গুরুতর আহত অবস্থায় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁকে। ঘণ্টা দুয়েক বেঁচে ছিলেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়।

মারুফার এই মৃত্যু কাঁদিয়েছে তাঁর সহযোদ্ধাদের। তাঁদের আশঙ্কা হয়তো প্রিয়জনকে ফিরে পাওয়ার আগে এভাবেই দুনিয়া ছাড়তে হবে তাঁদের। সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারুফার মৃত্যুর খবর পেয়ে তাই ছুটে গিয়েছিলেন ভুক্তভোগী আর মানবাধিকারকর্মীরা।

আজ শনিবার রাতে স্বজন গুম হয়ে গেছেন এমন মানুষদের মঞ্চ মায়ের ডাকের সমন্বয়কারী আফরোজা ইসলামের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলছিলেন, ছোট ছোট সন্তানদের নিয়ে কী কষ্ট করেছেন মারুফা, তার প্রত্যক্ষদর্শী তিনি।

আফরোজা বলেন, ‘যে নারী কখনো মুদির দোকানে যাননি, স্বামীর খোঁজে তিনি পথে পথে ঘুরেছেন। মায়ের ডাকের সব অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন। ফোনে যোগাযোগ রাখতেন। স্বামী গুম, ছেলে দুটো মানুষ করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে ভাবতেন সব সময়। কোনো দিন এক বেলা, কখনো আধপেটা খেয়ে দিন পার করেছেন।’

মারুফা ইসলামের বড় ছেলে সাইদুল ইসলাম ও ছোট ছেলে রামিমুল ইসলাম এখন চাঁদপুরে। সেখানেই দাফন হয়েছে তাঁর। ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল রাত থেকে তাঁর বাবার খোঁজে মায়ের যে যুদ্ধের শুরু, তার সমাপ্তি কী করে ঘটল তাই বলছিলেন সাইদুল।

মফিজুল ইসলাম ছিলেন ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি। তিনি যখন গুম হন, তখন সাইদুল অষ্টম শ্রেণির ছাত্র, ছোট ভাই রামিমুল ইসলামের বয়স আড়াই বছর। মফিজুল ঝুট কাপড়ের ব্যবসা করতেন। প্রতিদিনের মতো সেদিনও বেলা ১১টার দিকে বাসা থেকে বের হন।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারুফাকে ফোন করেন বাবার বন্ধুরা। তাঁরা জানান, একদল লোক ডিবি পরিচয়ে মফিজুলকে তুলে নিয়ে গেছে। তাদের পকেটে ওয়াকিটকি আর পরনে ডিবির জ্যাকেট। অনেক ধস্তাধস্তির পর মফিজুলকে একটা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে চলে গেছে তারা।

রাত পেরোতে না পেরোতেই স্বামীর খোঁজে নামেন মারুফা ইসলাম। এক ছেলেকে কোলে আর আরেক ছেলের হাত ধরে পরদিন তিনি দারুস সালাম থানা, শাহ আলী থানা, মিরপুর মডেল থানা ও পল্লবী থানায় যান। থানা জানায়, ওই নামে তারা কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।

থানা–পুলিশের পরামর্শে এবার মারুফা যান মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) কার্যালয়ে। সেখান থেকেও জানানো হয় এই নামে গ্রেপ্তার নেই কেউ। দারুস সালাম থানায় পরে একটি সাধারণ ডায়েরি করতে পেরেছিলেন মারুফা।

পরদিন মারুফার গন্তব্য ছিল ঢাকার সব হাসপাতাল। প্রতিটি হাসপাতালের লাশঘরে একটি একটি করে মৃতদেহ খুঁজে পার হয় আরও একটি দিন। এরপর তিনি যান আদালত পাড়ায়।

সাইদুল বলছিলেন, যদি গ্রেপ্তারের পর স্বামীকে আদালতে তোলা হয়, এই আশায় কতবার যে মিরপুর থেকে পুরান ঢাকার আদালতে তাঁর মা গেছেন, দুই হাতে গুনেও তিনি শেষ করতে পারবেন না।

ছোটাছুটির একপর্যায়ে মারুফা বুঝতে পারেন, ঘরে জমানো টাকা ফুরিয়ে আসছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, মফিজুলের বন্ধু, কখনো বাবার বাড়ি থেকে চেয়েচিন্তে চলতে হচ্ছিল। একদিন মিরপুরের বাসা থেকে তাঁরা সাভারের হেমায়েতপুরের একটা কম ভাড়ার বাসায় উঠে যান। খোঁজ তবু ফুরায় না মারুফার। দুষ্ট লোকেরাও নানা সময় তাঁকে ফোন করে ধোঁকা দিয়েছে। যখন যেখানে দেখা গেছে বলে খবর পেয়েছেন, তখনই ছুটেছেন তিনি।

এসএসসির পর সাইদুলকে কাজে দিয়ে দেন মারুফা। ১৭ বছরের ছেলে সংসারের হাল ধরে, পড়ালেখাও চালিয়ে যায়। আর মারুফার পথের সঙ্গী হয় তাঁর ছোট ছেলে রামিমুল।

গুম নিয়ে যখনই কেউ পথে দাঁড়িয়েছে মফিজুলের ছবি বা প্ল্যাকার্ড হাতে ছেলেকে নিয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি। এখন রামিমুলকে নিয়েই চিন্তা সাইদুলের। রামিমুলকে মা কোল ছাড়া করতে চাইতেন না। বাবার স্মৃতি নেই তার, মায়ের হাতে খেত, ঘুমাতোও মায়ের সঙ্গেই। মৃতদেহে হাত বুলিয়ে দেখেও রামিমুলের বিশ্বাস হয়নি মা আর নেই।

সাইদুল বলছিলেন, ‘আম্মুর বিশ্বাস ছিল আব্বু ফিরবে। অনেক দিন ধরে গুম হয়ে আছেন, এমন কেউ ফিরে এসেছেন শুনলেই আম্মু আমাদের খবর দিত। এখন আব্বু ফিরলেও আম্মুকে আর পাব না। আমরা চারজন আর এক হতে পারলাম না।’

সূত্র: প্রথম আলো

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

  • পাহাড়ে পরিকল্পিতভাবে বাঙালি উচ্ছেদ ও ডি ইসলামাইজেশন করা হচ্ছে

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • অসুরের মুখে দাঁড়ি-টুপি : মুসলিম বিদ্বেষে সীমা ছাড়াল ভারত

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আল্লামা সাঈদী রহ.-কে ৪ বার গুলি করে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছিল

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD