শনিবার, নভেম্বর ১, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home Home Post

‘থানায় থাকা ছেলে দু চোখ উপড়ানো অবস্থায় হাসপাতালে’

জুলাই ৩১, ২০১৯
in Home Post, বিশেষ অ্যানালাইসিস
Share on FacebookShare on Twitter

২০১৭ সালের ১৮ই জুলাই। খুলনায় শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন পিরোজপুরের সুবিদপুর গ্রামের মোঃ: শাহজালাল। সেদিন ছিনতাই-এর অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করেছিলো পুলিশ।

তার বাবা মোঃ জাকির হোসেনের অভিযোগ, তার সবজি ব্যবসায়ী ছেলেকে তিনি পুলিশে হেফাজতে দেখেছেন সেদিন সন্ধ্যা বেলায়। কিন্তু সেদিনই হাসপাতালে রক্তাক্ত অবস্থায় পেয়েছেন তাকে।

বাংলাদেশে পুলিশের হাতে নির্যাতনের শিকার এই পরিবারটি বিবিসি বাংলার কাছে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন।

মি. হোসেন তার বর্ণনা দিয়ে বলছিলেন, “ধরেন রাত সাতটা সাড়ে সাতটার সময় থানায় গেছি। আমার ছেলেরে থানায় কাস্টডিতে দেখছি। খাবার দাবারও দিয়ে আসছি। রাত তিনটা সাড়ে তিনটায় তারা তাকে মেডিকেলে নিয়ে ফেলে গেছে। আমরা সেখানে গিয়ে দেখি আমার ছেলের সমস্ত শরীরে রক্ত।”

হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পান ছেলের দুই চোখ তুলে নেয়া হয়েছে।

মি. হোসেন বলছেন, “ছেলেটা আমার বেঁচে আছে কিন্তু দুইটা চোখ ছেলের নাই। সে অন্ধ অবস্থায় ঘরে পরে রয়েছে।” এই কথাগুলো যখন বলছিলেন তখন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে আরম্ভ করেন তিনি।

জাকির হোসেন বলছেন এসব অভিযোগে পুলিশের একজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তার পরিবারের করা একটি মামলা এখনো উচ্চ আদালতে রয়েছে। এই সম্পর্কিত তদন্ত প্রতিবেদনও প্রত্যাখ্যান করেছেন মি. হোসেন।

‘হ্যান্ডকাফ পরিয়ে পিলারের মধ্যে বন্দি করে ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে মারা হয়’

পুলিশি হেফাজতে একই ধরণের নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা মোহাম্মাদ ইমতিয়াজ হোসেন রকি এবং তার বড় ভাই। তিনি বলছেন, নির্যাতন সইতে না পেরে মারা যান তার ভাই।

একটি সংঘর্ষের মামলায় তাকে ও তার ভাই ইশতিয়াক হোসেন জনিকে গ্রেফতার করার পর পুলিশি হেফাজতে ভয়াবহ নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তার অভিযোগে ইমতিয়াজ হোসেন রকি বলছিলেন, “আমি আর আমার ভাইয়াকে দুটি হ্যান্ডকাফ পরিয়ে একসাথে একটা পিলারের মধ্যে বন্দি করে চারিদিক থেকে ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে মারা হয়। সাত আটজন পুলিশ মিলে … মানে মানুষ কোন মানুষকে এইভাবে মারে না। তারা যেভাবে আমাদের দুই ভাইকে মারছে।”

তিনি বলছেন, এরপর তাদের হাজতখানায় রাখা হয়। এর পরপরই তার বড় ভাইয়ের বুকে ব্যথা ওঠে।

তিনি বলছেন, “আমার ভাই যখন বুকের ব্যথায় চিৎকার করেছিলো, তখন তাকে পুলিশরা বের করে নিয়ে যায়। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ভাইয়া সেখানেই মারা যায়।”

২০১৪ সালের এই ঘটনায় তার করা একটি মামলায় অভিযুক্ত পুলিশের একজন সাব ইন্সপেক্টর এখনো কারাগারে আছেন বলে জানিয়েছেন ইমতিয়াজ হোসেন রকি।

এই দুটি ঘটনাই বাংলাদেশে গণমাধ্যমে বহুল আলোচিত।

বাংলাদেশে নিরাপত্তা হেফাজতে নির্যাতনের চিত্র

নানা ধরণের নিষ্ঠুর নির্যাতন ও অমানবিক আচরণ বন্ধে বাংলাদেশ সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তার একটা পর্যালোচনা এখন চলছে জেনেভায় জাতিসংঘের এ সংক্রান্ত এক কমিটির সামনে।

বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল সেখানে গেছে সরকারের পক্ষের বক্তব্য তুলে ধরতে। অন্যদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের কথা তুলে ধরতে গেছেন বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধিরা।

নির্যাতন বন্ধ সংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদটি বাংলাদেশ অনুমোদন করেছিল বিশ বছর আগে। এই সনদটির পুরো নাম ‘কনভেনশন এগেইনস্ট টর্চার এন্ড আদার ক্রুয়েল, ইনহিউম্যান অর ডিগ্রেডিং ট্রিটমেন্ট অর পানিশমেন্ট।’

এই প্রথম এই সনদের অধীনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির পর্যালোচনা হচ্ছে।

এই সনদের অধীনে বাংলাদেশ নির্যাতন এবং অন্যান্য অমানবিক আচরণ বন্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে, সেটি জেনেভা বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারের পেশ করার কথা।

সরকার দাবি করছে এই লক্ষ্যে তারা এর মধ্যে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং আরও অনেক মানবাধিকার সংস্থা তা মানতে নারাজ।

নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে যে ধরণের নির্যাতন:

এই বৈঠকের প্রাক্কালে হিউম্যান রাইটস বাংলাদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে যে ধরণের নির্যাতন চলে তার একটি বিবরণ তুলে ধরেছে। তার কয়েকটি এরকম:

• বন্দীদের রড, বেল্ট এবং লাঠি দিয়ে পেটানো

• বৈদ্যুতিক শক্‌ দেয়া

• ওয়াটারবোর্ডিং (মুখের ওপর পানি ঢালতে থাকা যাতে করে পানিতে ডুবে যাওয়ার মতো অভিজ্ঞতা হয়)

• সিলিং থেকে বন্দীদের ঝুলিয়ে পেটানো

• ইচ্ছে করে বন্দীদের গুলি করা, বিশেষ করে পায়ের নীচের অংশে। এটিকে বলা হয় ‘নীক্যাপিং।’ এসব ঘটনাকে পুলিশ ‘ক্রসফায়ার’ বলে বর্ণনা করে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলী বলছেন, বাংলাদেশে এসব ঘটনা কোন বিচার হয়না বলেই নির্যাতনের একটি সংস্কৃতি বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে গেছে।

তিনি বলছেন, “সিকিউরিটি ফোর্সের লোকেরা বলেন টর্চার ছাড়া নাকি তারা তদন্ত করতে পারে না। এই যে একটা মনোভাব এটা আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশেই আছে। বাংলাদেশে যেটা সেটা হল টর্চার তাদের একটা রুটিন প্র্যাকটিসের মতো। তারা টর্চার এইজন্যেই করেন কারণ তারা এটা করতে পারেন। তারা ভাবেন তাদের এটা করার অনুমতি আছে।”

তিনি আরও বলছেন, “বাংলাদেশ রাষ্ট্র পরিচালনার পদ্ধতি হিসেবেই যেন এগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে। আর সেজন্যে শুধু বিরোধী মতে ব্যক্তিরাই শুধু নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও ভয় ঢুকে গেছে।”

সরকার কী বলছে?
জাতিসংঘের কমিটির সামনে বাংলাদেশ তাদের প্রতিবেদনে দাবি করেছে যে নির্যাতন বন্ধে এবং নির্যাতনের শিকার যারা হন, তারা যাতে ন্যায় বিচার পান সেই লক্ষ্যে অনেক পদক্ষেপ তারা নিয়েছে।

২০১৩ সালে বাংলাদেশে ‘টর্চার এন্ড কাস্টডিয়াল ডেথ (প্রিভেনশন) অ্যাক্ট’ নামে একটি আইন পাশ করে।

কিন্তু এই আইনের অধীনে এ পর্যন্ত খুব কম মামলাই হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, এর মধ্যে একটি মামলারও এখনো পর্যন্ত নিস্পত্তি হয়নি। তারা আরও বলছে, এই আইন পাশ হওয়ার পর অন্তত ১৬০ টি নির্যাতনের ঘটনার রেকর্ড আছে। প্রকৃত নির্যাতনের ঘটনা তাদের মতে আরও বেশি।

সূত্র: বিবিসি

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

জনপ্রিয় সংবাদ

  • রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর: ১৫ বছর পরেও বেপরওয়া খুনিরা, সুবিচার পায়নি শহীদ পরিবার

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • পাহাড়ে পরিকল্পিতভাবে বাঙালি উচ্ছেদ ও ডি ইসলামাইজেশন করা হচ্ছে

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ইসলামী সংস্কৃতি ও আধুনিক সংস্কৃতি

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD