বুধবার, অক্টোবর ১৫, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home Home Post

ডাকসুতেও ‘হুদা কমিশন’!

মার্চ ১২, ২০১৯
in Home Post, কলাম, মতামত
Share on FacebookShare on Twitter

সোহরাব হাসান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষণে ক্ষণে দৃশ্যপট বদলে যেতে থাকে। আজ ১৮টি আবাসিক হলে ভোট গ্রহণ করা হয়। প্রথমেই অঘটন ঘটে কুয়েত মৈত্রী হলে। সেখানে একটি ব্যালট বাক্সে সিল মারা ব্যালট পেপার পাওয়া যায়। অভিযোগ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হলের প্রাধ্যক্ষ শবনম জাহানকে অপসারণ করে নতুন প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ করে মাহবুবা নাসরিনকে। মৈত্রী হলে ভোটগ্রহণ শুরু হয় বেলা ১১টা ১০ মিনিটে।

এদিকে ব্যালট বাক্স নিয়ে গোল বাধে রোকেয়া হলেও। এই হলের নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত ৯টি ব্যালট বাক্সের মধ্যে সকালে ৬টি খোলা হলেও পাশের কক্ষে রাখা হয় বাকি তিনটি। হলের ছাত্রীরা এটি জানতে পেরে ব্যালট বাক্স ভেঙে ফেলেন এবং তিনটি বাক্সে প্রচুরসংখ্যক ব্যালট পেপার পাওয়া যায়, যদিও সেগুলো সিল মারা ছিল না। এরপর কর্তৃপক্ষ বেলা তিনটা থেকে রোকেয়া হলে ফের ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগেই বেলা ১টায় ছাত্রলীগ ছাড়া সব ছাত্রসংগঠনই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়। তারও আগে ছাত্রলীগের কর্মীরা রোকেয়া হলে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ভিপি প্রার্থী নুরুল হককে এবং প্রগতিশীল ছাত্র জোটের ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দীকে মারধর করেন। এ নিয়েও ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিরোধী ছাত্র সংগঠন থেকে স্লোগান ওঠে, ‘যে ভিসি ছাত্রলীগের, সে ভিসি মানি না।’

সকাল ১০টায় শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাঁ-পাশের ফুলের দোকানগুলো দেখে মায়া হলো। বেশির ভাগ দোকানের ঝাঁপ বন্ধ। ক্রেতা নেই। ডাকসু নির্বাচনের কারণে ক্যাম্পাসে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ। কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগার বরাবর সড়কে পুলিশের ব্যারিকেড। সবাইকে হেঁটে ক্যাম্পাসে ঢুকতে হচ্ছে পরিচয়পত্র দেখিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাংবাদিক, স্বেচ্ছাসেবক ছাড়া কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র ছাড়া কোনো যানবাহনেরও প্রবেশ নিষেধ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ পার হয়ে মধুর ক্যানটিনে যেতে দেখলাম, কয়েকজন শিক্ষার্থী পশ্চিম দিক থেকে আসছেন। জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা কোন হলের ছাত্র? একজন বললেন, মুহসীন হলের ভোটার। ভোট দিয়েছেন? তাঁর উত্তর, অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েও ভোট দিতে পারেননি, ‘ছাত্রলীগ তাদের সমর্থকদের লাইনে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। কীভাবে ভোট দেব।’

তখন কলাভবনে শিক্ষক লাউঞ্জে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সরগরম আলোচনা। একজন শিক্ষক বললেন, ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। এরই মধ্যে খবর এল রোকেয়া হলে ব্যালট বাক্স নিয়ে গোল বেধেছে। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও সাংবাদিকেরা ভোট গ্রহণের আগে ব্যালট বাক্স খুলে দেখানোর দাবি জানালে প্রাধ্যক্ষ অস্বীকৃতি জানান। কিছুক্ষণ এ নিয়ে বচসা হয়। প্রার্থী ও সাধারণ ছাত্রীরা থাকেন অনড় অবস্থানে। বাক্স না খোলা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ শুরু করা যাবে না। শেষ পর্যন্ত প্রাধ্যক্ষ হার মানলেন। প্রার্থী ও সাধারণ ছাত্রীদের সামনে ব্যালট বাক্স খোলা হলো। এ কারণে রোকেয়া হলে ভোট গ্রহণ শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের ঘণ্টাখানেক পর। তবে ওই হল থেকে বেরিয়ে আসা কয়েকজন ছাত্রীকে জিজ্ঞেস করি, ভোট দিয়েছেন কি না। তাঁরা বললেন, ভোট দিয়েছেন। কোনো সমস্যা হয়নি।

আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাস পেরিয়ে কিছুটা উত্তরে গেলে পাশাপাশি তিনটি হল চোখে পড়বে—বিজয় একাত্তর হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল। তিনটি হলের সামনেই শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ লাইন। বেলা ১১টায় জিয়া হলের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখি আটটি বুথে ভোট গ্রহণ চলছে। তার পরও ছাত্রদের প্রচণ্ড ভিড়। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করি, এ পর্যন্ত কত ভোট পড়েছে? বললেন, পাঁচ শতাধিক ভোট পড়েছে। ওই হলে মোট ভোটার ২২০০। তিন ঘণ্টায় ১৬০০ ভোট দেওয়া সম্ভব হবে কি না? জানতে চাইলে হলের প্রাধ্যক্ষ ড. জিয়াউর রহমান জানান, কোনো সমস্যা হবে না। বেলা দুটার মধ্যে যাঁরাই হলের ভেতরে থাকবেন, তাঁরা সবাই ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন।

পাশের বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ শফিউল আলম ভূইয়া। তিনিও একই কথা বললেন। লাইনে দাঁড়ানো কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করি, কতক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন? একজন বললেন, দুই ঘণ্টা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ছিল না বলে পাবলিক বাসে কষ্ট করে কয়েকজন এসেছেন সাভার থেকে। লাইনের বাইরে থাকা একজন নিজেকে হলের প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়ে বললেন, এখানে ছাত্রলীগ তাদের কিছু সমর্থককে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। এ কারণেই ভোটারের লাইন এগোচ্ছে না।

জগন্নাথ হলের চিত্রও প্রায় অভিন্ন। আমাদের সহকর্মী জানাচ্ছেন, সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভোট দিতে লাইনে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করছেন ভোটাররা। অনেকে লাইনেই হাঁটু গেড়ে বসে রয়েছেন। ভোট দিতে এত দীর্ঘ সময় লাগা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা যায় ভোটারদের। তাঁদের প্রশ্ন, ভোটের লাইন এগোয় না কেন? ছাত্রলীগ ছাড়া অন্য প্যানেলের প্রার্থীদের সন্দেহ, ভোট দিতে কৃত্রিমভাবে সময় বেশি নেওয়া হচ্ছে। যাতে অপেক্ষা করতে করতে বিরক্ত হয়ে ভোট না দিয়ে ভোটাররা চলে যান। জগন্নাথ হলে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সৌম্যক সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেড় ঘণ্টা ধরে প্রায় একই জায়গায় অপেক্ষা করছি। সামনের দিকে এগোতে পারছি না। সামনে কী হচ্ছে, বুঝতে পারছি না।’

লাইন থেকে সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখা গেল, ভোটকক্ষে যাওয়ার পথে আর্চওয়ে দিয়ে খুব ধীরগতিতে দু-একজন করে শিক্ষার্থীকে ভেতরে ঢোকানো হচ্ছিল। এ সময় আশপাশে ছাত্রলীগের সমর্থক প্রার্থীদের ছবিযুক্ত কার্ড গলায় ঝুলিয়ে বেশ কয়েকজনকে আর্চওয়ের আশপাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। হল প্রভোস্টের অনুমতি নিয়ে ভোটকক্ষের সামনে গিয়ে দেখা গেল, সেখানেও ভোট দেওয়ার জন্য দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করছেন শিক্ষার্থীরা। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে লাইনে দাঁড়ানো কয়েকজন ভোটার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যে গতিতে ভোট চলছে, তাতে কোনো অবস্থাতেই সব ভোটার ভোট দিতে পারবেন না।

ডাকসু নির্বাচনটি বাইরে থেকে সুনসান মনে হলেও ভেতরের চিত্রটি ছিল ভিন্ন। বিশেষ করে মেয়েদের হলেই বেশি অঘটন ঘটেছে, যার সঙ্গে শুধু সরকার সমর্থক ছাত্রসংগঠনটিই জড়িত নয়, প্রাধ্যক্ষরাও নিজেদের পক্ষভুক্ত করেছেন। ব্যালট বাক্স কেলেঙ্কারি করেছেন। এর প্রতিবাদে বিরোধী ছাত্রসংগঠনগুলো নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। তারা পুনর্নির্বাচনের দাবিতে মঙ্গলবার ছাত্র ধর্মঘট ডেকেছে।

শেষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি বিতর্কিত নির্বাচনই করল। ডাকসু নির্বাচনেও ব্যালটবাক্স কেলেঙ্কারি হলো। এর আগে এক লেখায় বলেছিলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেহেতু হুদা কমিশন নেই, ফলে ডাকসু নির্বাচনটি ভালো হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা তথা নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা নিজেদের হুদা কমিশন থেকে ভিন্ন কিছু প্রমাণ করতে পারলেন না।

সোহরাব হাসান: কবি ও সাংবাদিক

সূত্র: প্রথম আলো

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

জনপ্রিয় সংবাদ

  • ‘হেল্প সেল’ এর তৎপরতা বন্ধ করতেই ছাত্রদল নেতা নুরুকে হত্যা?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • অনৈসলামিক কর্মকান্ড বন্ধে আল্লামা সাঈদীর ভূমিকা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • বিতর্কিত আজিজের সাক্ষাৎকার নিয়ে লে. কর্নেল মুস্তাফিজের বিশ্লেষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD