অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
কক্সবাজারের গুরুত্বপূর্ণ একটি সংসদীয় আসন হলো কুতুবদিয়া-মহেশখালী আসন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে যখন বিএনপি জামায়াত জোট পরাজিত হয়েছিল, ঠিক তখনো শত প্রতিকূলতার মধ্যেও বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ। তিনি মহেশখালী-কুতুবদিয়াবাসীর নিকট একজন জননন্দিত নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর দুইটি উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ যেকোনো সমস্যায় তিনি জনগণের পাশে ছিলেন। রাস্তা-ঘাট, মসজিদ, মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণসহ সব কিছুতেই তার সময় উন্নয়নের ছোয়া লেগেছে। তাই মহেশখালী-কুতুবদিয়াবাসী হামিদুর রহমান আযাদকে আপনজন হিসেবে জানে।
বিশেষ করে বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা কিংবা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের ওপর হামলা ও তাদের বাড়ি ঘর ভাঙচুর এবং মন্দিরে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটলেও হামিদুর রহমান আযাদের সময় মহেশখালী কুতুবদিয়ার হিন্দু-বৌদ্ধরা ছিল নিরাপদে। ৫ বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন কারো দ্বারা আক্রান্ত কিংবা তাদের বাড়িঘর ও মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। হামিদুর রহমান আযাদ কুতুবদিয়া-মহেশখালীর সকল শ্রেণি পেশার মানুষের প্রিয়নেতা হিসেবে পরিণত হয়েছেন।
কিন্তু, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে কুতুবদিয়া-মহেশখালী থেকে বিনাভোটে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের আশিকুল্লাহ রফিক। এরপর থেকেই দুইটি উপজেলায় শুরু হয় সংঘাত-সংঘর্ষ, মারামারি, হানাহানি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, খুন, হত্যা, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, হিন্দুদের জমি দখল। লুটপাটে ব্যস্ত হয়ে পড়ে এমপি আশিকুল্লাহ রফিক ও তার বাহিনী। বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর শুরু হয় নির্যাতনের স্টিম রোলার।
কুতুবদিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ের লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান ওসি দিদারুল ফেরদৌস ২০১৭ সালের ১৩ আগষ্ট যোগদানের পর থেকেই বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে গ্রেফতার হয়রানি শুরু করেন। বিশেষ করে একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ওসি দিদারুল ফেরদৌস এখন অতিমাত্রায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন বিএনপি জামায়াত নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ তল্লাশির নামে হয়রানি করছে। ভাঙচুর ও লুটতরাজ চালাচ্ছে।
গত সপ্তাহে জামায়াত নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আলমের বাড়িতে মধ্যরাতে পুলিশ ঢুকে তছনছ করে দিয়ে এসেছে। তারা শাহরিয়ার আলমকে না পেয়ে বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের এমপি প্রার্থী আশিকুল্লাহ রফিকের নির্দেশেই ওসি দিদারুল ফেরদৌস পুলিশ দিয়ে এসব করাচ্ছে। এমনকি বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীদেরকে বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয়া হচ্ছে নির্বাচনের আগে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে। ওসি দিদারুলের এসব কর্মকাণ্ডে কুতুবদিয়ার সাধারণ মানুষও এখন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এমপি আশিকুল্লাহ ও ওসি দিদারুল জানে লোকজন ভোট কেন্দ্রে যেতে পারলে হামিদুর রহমান আযাদের জয়কে কোনোভাবেই ঠেকাতে পারবে না। এজন্য নির্বাচনের আগেই বিএনপি জামায়াতের লোকদেরকে বাড়ি ছাড়া করার চেষ্টা করছে তারা। এমন অবস্থা চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবে না। তারা দলবাজ ওসির প্রত্যাহার চায়। ভোটের দিন যেকোনো মূল্যে প্রিয় প্রার্থীকে নিজের ভোট প্রদানের অপেক্ষায় আছে এলাকাবাসী।